সারাদেশে সোয়া ২ লাখ বেল তুলা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

চলতি মৌসুমে (২০১৮-২০১৯) তুলা উন্নয়ন বোর্ড সারাদেশে ৫০ হাজার হেক্টরে তুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে। আর তুলা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ১৬০ বেল। দেশে গার্মেন্টস শিল্পের ব্যাপক প্রসারের জন্য প্রতিবছর তুলার চাহিদা বাড়ছে। তুলার চাহিদা বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে দেশে তুলার উৎপাদন বৃদ্ধি করা যাচ্ছে না। বর্তমানে দেশে তুলার বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৭৫ লাখ বেল।

তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে (২০১৮-১৯) যশোর জোনে ৩ হাজার ৫’শ হেক্টরে সমভূমির তুলা চাষ করে ২৩ হাজার ৬৫ বেল তুলা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জোনে তুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ৪ হাজার ৬’শ হেক্টরে। তুলার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ৩১৪ বেল। রাজশাহী জোনে ২৮’শ হেক্টরে তুলা চায় করে ১৮ হাজার ৪৫২ বেল তুলা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জোনে ৪ হাজার ৬’শ হেক্টরে তুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। তুলার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ৩১৪ বেল। বগুড়া জোনে ২২’শ ৫০ হেক্টরে তুলা চাষ করে ১৪ হাজার ৮২৮ বেল তুলা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া জোনে তুলা চাষ লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ৪ হাজার ৬’শ হেক্টরে। তুলার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ৩১৪ বেল। রংপুর জোনে ২৬’শ হেক্টরে তুলা চাষ করে ১৭ হাজার ১৩৪ বেল তুলা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জোনে ১৭’শ হেক্টরে তুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। তুলার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২০৩ বেল। ময়মনসিংহ জোনে ২১’শ হেক্টরে তুলা চাষ করে ১৩ হাজার ৮৩৯ বেল তুলা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। ঢাকা জোনে তুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ১৭’শ হেক্টরে। তুলার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২০৩ বেল। তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় ১১’শ ৫০ হেক্টরে সমভূমির তুলা চাষ করে ৬ হাজার ৯২১ বেল তুলা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া তিন পার্বত্য জেলায় ১৮ হাজার ৫’শ হেক্টরে পাহাড়ি জাতের তুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। পাহাড়ি জাতের তুলার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৫৭৫ বেল।

তুলা উন্নয়ন বোর্ডের এক ঊর্ধ্বতন সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে (২০১৭-১৮) সারাদেশে ২৬ হাজার ৩০০ হেক্টরে সমভূমির ও ১৬ হাজার ৭৫০ হেক্টরে পাহাড়ি জাতের তুলা চাষ করা হয়েছিল। মোট তুলা উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ৬৫ হাজার বেল।

১৯৭৭ সালে আমেরিকান ডেল্টাপাইন জাতের তুলা চাষের মধ্য দিয়ে নতুন করে তুলা চাষের যাত্রা শুরু হয়। চাষ সফল হয়। আস্তে আস্তে চাষ সম্প্রসারণ ঘটতে থাকে, বিশেষ করে দক্ষিণ পশ্চিমের জেলা গুলোতে। দেশে উৎপাদিত তুলার ৭০ ভাগই উৎপাদন হয় কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর ও মাগুরা জেলাতে।

তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. ফরিদ উদ্দিন ইত্তেফাকের এ প্রতিনিধিকে জানান, কম জমিতে তুলা চাষ করে বেশি উৎপাদনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বিটি জাতের তুলা চাষের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ভারত থেকে বিটি জাতের তুলা বীজ এনে ট্রায়াল চলছে।

উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য হাইব্রিড জাত গুলোর চাষ প্রচলন করা হচ্ছে। বর্তমানে তুলার বিঘা প্রতি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে বিঘা প্রতি ৮-১০ মন ফলন হতো। বর্তমান বিঘা প্রতি ১৫-১৬ মন পর্যন্ত ফলন হচ্ছে বলে তিনি জানান। এখন তুলা চাষে ৭ মাস সময় লাগে। আমন ধান কাটার পর ওই জমিতে স্বল্প মেয়াদী জাতের তুলা চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খরা প্রবণ এলাকা গুলোতেও পতিত জমিতে তুলা চাষের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।